আগের আসরে গাড়ি-মোটরবাইক কিছুই ছিল না। বিপিএলের টুর্নামেন্ট সেরা পেয়েছিলেন কেবল ২ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় বর্তমানে যা ২ লাখ টাকার কাছাকাছি। এ নিয়ে কড়া সমালোচনা শুনতে হয়েছে আয়োজকদের।
আরো পড়ুনঃপরিস্থিতি ‘কঠিন বাখমুতের কাছে: ইউক্রেন
তবে এবার টুর্নামেন্ট সেরা পুরস্কারের জন্য থাকছে বিশাল অঙ্কের পুরস্কার। ১৬ ফেব্রুয়ারি বিপিএল ফাইনালের দিন টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার যার হাতে উঠবে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে ১০ লাখ টাকাও। সঙ্গে আকর্ষণীয় ট্রফি তো থাকছেই।
প্রথম দুই আসরে গাড়ি পুরস্কার দেওয়ার পর এবারই টুর্নামেন্ট সেরাকে ভালোমানের ও বড় অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার দিচ্ছে বিসিবি। তবে এবার টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার কে পাবেন তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে গেছে এখনই। কারণ বিপিএলে বাকি কেবল দুই ম্যাচ। ফাইনালে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। রংপুর রাইডার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স খেলবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার। ম্যাচে যারা জিতবে তারা হবে কুমিল্লার ফাইনালের প্রতিপক্ষ।
বিপিএলের আট আসরে চারবারই টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন সাকিব। প্রথম দুই আসরের পর ২০১৭ সালে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান বাঁহাতি অলরাউন্ডার। সেবার অর্থ পুরস্কারের সঙ্গে একটি মোটরবাইকও পেয়েছিলেন। সাকিবের শোকেসে বিপিএল সেরার পুরস্কার গেছে গত আসরেও। এবার আবার সেরার দৌড়ে ছুটছেন বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার। ১১ ইনিংসে ব্যাট হাতে ৩৭৫ রান করেছেন সাকিব। বল হাতে ১৩ ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট। ব্যাটিংয়ে এবার সাকিব আগের সব আসরের পারফরম্যান্সকে ছাড়িয়ে গেছেন। এর আগে কেবল দুইবারই তিন’শ-এর বেশি রান করেছিলেন। দ্বিতীয় আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের হয়ে ১২ ম্যাচে ৩২৯ রান এবং ষষ্ঠ আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১৫ ম্যাচে ৩০১ রান করেছিলেন। আর বোলিংয়ে এবারই সবচেয়ে কম উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে চতুর্থ আসরে ঢাকার জার্সিতে ১৩ উইকেট পেয়েছিলেন। ব্যাটিংয়ে উজ্জ্বল পারফরম্যান্সে ঢাকা পড়েছে সাকিবের বোলিং পারফরম্যান্স। তার দল বিদায় নিয়েছে এলিমিনেটর ম্যাচ থেকে। তবে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স তার এবারও টুর্নামেন্ট সেরা হবার সম্ভাবনা জোরালো।
সাকিবের পরপরই যে তিনটি নাম সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে তারা হলেন— নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয় ও নাসির হোসেন। সিলেট স্ট্রাইকার্সের দুই ব্যাটসম্যান শান্ত ও হৃদয়ের ব্যাট ছুটেছে দুর্বার গতিতে। সিলেটকে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার পর্যন্ত তুলে আনতে তাদের অবদান ছিল বিশাল। ১৩ ইনিংসে ৪১২ রান করা শান্ত টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৩৭.৪৫ গড় ও ১১২.২৬ স্ট্রাইক রেটে ৩ ফিফটিতে এ রান করেছেন জাতীয় দলের ওপেনার। টুর্নামেন্টের আগে বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্স নিয়ে কিছু কথা উঠেছিল। কিন্তু বিপিএলে নজরকাড়া পারফরম্যান্স সব আলো নিজের করে নিয়েছেন সিলেটের ক্রিকেটার।
বিপিএলে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় যে এসেছেন তার নাম তৌহিদ হৃদয়। সিলেটের এ ক্রিকেটার বিপিএলের শুরুতে যে ছন্দে ছিলেন মনে হচ্ছিল এবার রেকর্ডবুক তছনছ করে দেবেন। কিন্তু ইনজুরিতে দলের বাইরে যাওয়ার পর ছন্দ হারান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ফিরে এসে পুরোনো রূপে দেখা দিলেও শুরুর ছন্দে ছেদ পড়েছে। তবুও রান তোলায় দ্বিতীয় স্থানে তৌহিদ। ১০ ইনিংসে ৩৭৮ রান করেছেন ৪২ গড়ে। স্ট্রাইক রেট ১৪৫.৩৮, ফিফটিই আছে পাঁচটি।
তিনে হৃদয়ের পর চারে রয়েছেন নিজেকে ফের আলোয় আনা নাসির হোসেন। টুর্নামেন্টের তলানির দল ঢাকা ডমিনেটর্সের হয়ে খেলেছিলেন নাসির। ১২ ইনিংসে ৩৬৬ রান ও বল হাতে ১৬ উইকেট নিয়ে হারিয়ে না যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। ইনজুরির কারণে গত বিপিএলে খেলতে পারেননি। এর আগের আসরগুলোতে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। এবারের বিপিএলে নাসির নিজেকে ফিরে পাওয়ার বার্তা দিয়েছেন ভালোভাবে। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারের দৌড়ে পিছিয়ে থাকলেও তার নাম আলোচনায় রয়েছে। এটাও কম কিসের।
বিপিএলে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স:
খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলস- সাকিব আল হাসান (২৮০ রান ও ১৫ উইকেট)
ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স- সাকিব আল হাসান (৩২৯ রান ও ১৫ উইকেট)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- আসগর জাইদি (২১৫ রান ও ১৭ উইকেট)
খুলনা টাইটান্স- মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৩৯৬ রান ও ১০ উইকেট)
রংপুর রাইডার্স- ক্রিস গেইল (৪৮৫ রান)
ঢাকা ডায়নামাইটস- সাকিব আল হাসান (৩০১ রান ও ২৩ উইকেট)
রাজশাহী রয়্যালস- আন্দ্রে রাসেল (২২৫ রান ও ১৪ উইকেট)
সাকিব আল হাসান- ফরচুন বরিশাল (২৮৪ রান ও ১৬ উইকেট)
আরো পড়ুনঃ বিচার শুরু হলো যুক্তরাজ্যের দূতাবাসে রাশিয়ার চর, গার্ডের